আমেরিকা থেকে ডাক্তার দম্পতি এসে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন গাজিপুরের কালিয়াকৈর গ্রামের এক দাতব্য হাসপাতালে। ইত্যাদি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রচারিত হওয়ার পর এই সংবাদ সারাদেশে ভাইরাল। আমেরিকান দম্পতির প্রশংসায় পঞ্চমুখ দেশবাসী৷ দেশের বাইরে থেকে একজন ডাক্তার এলেন কিন্তু দেশি কোনো ডাক্তার সাহায্য করতে এগিয়ে গেলেন না, এই নিয়ে প্রচুর মানুষজন লজ্জিত বলেও জানা গেছে।
এই যখন অবস্থা তখন বাংলাদেশের জনগণ ইচ্ছা প্রকাশ করেছে নিজেদের মানবিকতা দেখানোর। বাংলার মানুষও দেখাতে চায়, মানবতায় তারাও পিছিয়ে নেই, মানুষের সেবা করার ইচ্ছা তাদেরও আছে। আর তাই ইত্যাদি দেখার পর লজ্জায় আমেরিকার কোন গ্রামে চলে যেতে চায় সাধারণ মানুষদের অনেকেই। এরকমই একজন রাঙামাটির সুচয়ন চাকমা কিংশুক। তিনি eআরকির কাছে দুঃখ ভারাক্রান্ত গলায় বলেন (লজ্জায় তার কন্ঠ হেট হয়ে আসছিলো!), 'নিজেকে মানুষ হিসাবে খুব ছোট মনে হচ্ছে। আমেরিকা থেকে তারা আসলো সেবা দিতে, আমরা কেন পারব না? সুযোগ দিলে আমিও আমেরিকায় গিয়ে সেবা দিতে চাই। আমেরিকার কোনো শহর বা গ্রামে দুবেলা দুমুঠো খেয়ে পরে কাটাতে চাই। কেউ প্লিজ আমাকে সুযোগটা দিন।'
আরেক ব্যক্তি অবশ্য কিঞ্চিৎ রেগে গিয়ে বলেন, 'ওরা চাইলেই বাংলাদেশে চলে আসতে পারে। এর আগেও প্রেমের টানে বহু মানুষ এসেছে৷ এবার আসলো মানবিকতার টানে৷ কিন্তু আমাদেরও তো টান আছে। ডলারের প্রতি আমার যে প্রেম সেই প্রেমের টানে আমিও আমেরিকা যেতে পারি। যেতে পারি কোনো হাসপাতালে চাকরি নিয়েও। কিন্তু তারা তো যেতে চাইলেও ভিসা দেবে না। পালিয়ে গেলে বের করে দেবে অথবা জেল খাটাবে৷ এখন কি দোষ আমাদের? এমন তো না যে আমাদের আমেরিকা যাওয়ার ইচ্ছা নাই।'
eআরকির একটি বিশেষ জরিপে দেখা গেছে, দেশের নিরানব্বই শতাংশই মানুষই মানবিকতার টানে সেবা দিতে আমেরিকা যেতে চায়। তার মধ্যে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার থেকে শুরু করে চেয়ারম্যান, মেম্বারদের মত ক্ষমতাসীন ব্যক্তিরাও আছেন। আছেন বিসিএস ক্যাডাররাও। সবাই লাইন বেধে আমেরিকার কোনো গ্রামে গিয়ে সেবা দেয়ার সুযোগ চায়। বাকি যে এক শতাংশ মানুষ সেবা দিতে আমেরিকা যেতে রাজি হয়নি, জানা যায় তারা আসলে আমেরিকা বা ইউরোপ প্রবাসী। ছুটি কাটাতে দেশে এসে আমাদের জরিপের শিকার হয়েছে।
eআরকির এই জরিপই প্রকাশ করে যে, আমেরিকা বা ইউরোপ না, সবচাইতে মানবিক হলো বাংলাদেশের মানুষ। তাদের প্রাণ কাঁদে আমেরিকার মানুষের জন্য। তাই তারা সুযোগ পেলেই আমেরিকা গিয়ে সেবা করা শুরু করবে।