বিশ্বের নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যখন ক্লাইমেট চেঞ্জ, এআই, বা ন্যানোটেকনোলজির মতো বিষয় নিয়ে উচ্চতর গবেষণায় ব্যস্ত, তখন এক ধাপ এগিয়ে প্যারিস স্কুল অফ পিনোকোমিক্স নিয়ে এসেছে এক যুগান্তকারী উদ্যোগ। প্রোপাগান্ডা স্টাডিজে মাস্টার্স প্রোগ্রাম। কারণ, যে গুজব ছড়াতে পারে, সে বিশ্ব চালাতে পারে—এটাই তাদের মটো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মহোদয় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, আমরা এমন একটি পৃথিবী চাই যেখানে সত্য-মিথ্যার বিভাজন পুরোপুরি বিলীন হবে। আমাদের লক্ষ্য এমন সব পণ্ডিত তৈরি করা যারা প্রোপাগান্ডার মাধ্যমে মিথ্যাকে এমনভাবে উপস্থাপন করবে, যেন তা নতুন যুগের ধর্মগ্রন্থ হয়ে যায়।
ফ্যাকাল্টি রিক্রুটমেন্টের ক্ষেত্রে তারা ভাবছেন শুধু থিওরিটিশিয়ানদের নয়, একেবারে মাঠের প্র্যাকটিশনারদের। শোনা যাচ্ছে, বাংলাদেশি কিছু সাংবাদিক এবং সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকটিভিস্টদের ইতোমধ্যে গেস্ট ফ্যাকাল্টি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এক সাংবাদিক জানান, আমরা তো ইদানিং গুজব ছড়ানোর ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকায় আছি। আন্তর্জাতিক মানের এই কাজের স্বীকৃতি পেলেই যেন আমাদের জীবনের স্বার্থকতা।
অন্যদিকে, ডিজিটাল প্রোপাগান্ডার কোর্সের জন্য খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে ইলিয়াস হোসেনের নাম উঠে আসছে। যদিও তিনি এখনও কিছু বলেননি, তার ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, তিনি ইউটিউবে ইতোমধ্যে চালু করেছেন একটি অনলাইন কোর্স, প্রোপাগান্ডা: টুল অফ মাস্টারমাইন্ড। কোর্সে দেওয়া হচ্ছে হাতে-কলমে ট্রেনিং: কীভাবে তিন মিনিটের ভিডিওতে মানুষকে বিভ্রান্ত করা যায় এবং কীভাবে ফেক নিউজ দিয়ে এক রাতেই ভাইরাল হওয়া যায়।
প্রোপাগান্ডা নিয়ে আরও ভালোভাবে কাজ করার জন্য ভারতীয় বিভিন্ন পত্রিকা ও টেলিভিশনের সাংবাদিকরা বেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ইতোমধ্যে রিপাবলিক চ্যানেল তাদের পুরো টিমকে একসাথে মাস্টার্স করানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের এডমিশন টিমের সাথে যোগাযোগ করেছে বলে জানা গেছে। সাংবাদিক ময়ূখ আরও ভয়ঙ্কর হিসবে ফিরে আসার ঘোষণা দিয়েছেন ফেসবুকে, আগে কারণ না বুঝলেও এখন বুঝতে পারছি কেন এমন বলেছেন তিনি।
তবে অনেকে মনে করছেন, প্রোপাগান্ডার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এক বছরের কোর্সে শেখা সম্ভব নয়। এটা তো একেবারে প্রাইমারি স্কুল থেকে শেখানো দরকার, এমন মন্তব্য করেন এক বিশিষ্ট্য ফেসবুকার। কেউ কেউ আবার বলছেন, প্যারিস স্কুল অফ পিনোকোমিক্স থেকে মাস্টার্স করে লাভ কী? ইলিয়াস হোসেনের কোর্স করলেই তো ঝটপট রেজাল্ট পাওয়া যাবে!
বিশ্ব রাজনীতির ভবিষ্যৎ এখন দুই মেরুতে বিভক্ত। একদিকে প্যারিস স্কুল অফ পিনোকোমিক্সের প্রোপাগান্ডা স্টাডিজ, অন্যদিকে ইলিয়াস হোসেনের ইউটিউব কোর্স। নেটফ্লিক্সের দিন যে ফুরোচ্ছে, তা বলাই যায়। এখন মানুষ গুজব দিয়ে গেম খেলবে, আর মিথ্যার ইঞ্জিনিয়ারিং শিখবে।
সময়ই বলবে কে এই দৌড়ে জিতবে। তবে এক জিনিস নিশ্চিত: সত্যের মৃত্যু, মিথ্যার উত্থান, আর প্রোপাগান্ডার মহোৎসবে আমরা এক নবযুগে প্রবেশ করছি।