২০২৫ সালের শুরুতেই বাংলাদেশের হাত ধরে চিকিৎসা সেবায় নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। এনেস্থেশিয়ার বদলে ছোটখাটো কাটাছেড়া, সেলাই এবং বিভিন্ন অপারেশনে এখন ব্যবহার করা হচ্ছে ঠান্ডা পানি। ঢামেকসহ দেশের বেশির ভাগ মেডিকেল কলেজে গতকাল থেকে যতগুলো অপারেশন হয়েছে, সেগুলোর সবগুলোতেই এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছে। রোগীরাও বিষয়টি ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছেন।
ঢামেকের সার্জারি বিভাগে এক রোগীর অপারেশনের সময় এনেস্থেশিয়া ব্যবহার করার প্রস্তাব দিলে তিনি বললেন, ডাক্তার সাহেব, এসব বাদ দেন। বাইরে থেকে এক মগ ঠান্ডা পানি এনে ঢেলে দেন। দেখবেন, সেকেন্ডের মধ্যে গা অবশ হয়ে যাবে। প্রথমে ডাক্তাররা সন্দেহ প্রকাশ করলেও রোগীর জোরাজুরিতে শেষমেশ পানি ঢেলে অপারেশন করা হয়। সার্জারি সফল হওয়ার পর এই পদ্ধতি অন্য রোগীদের ওপরও প্রয়োগ করা হয়, এবং সবাই একই ফল পান—কোনো ব্যথা ছাড়াই অপারেশন সম্পন্ন হয়।
ঢামেকের এক সিনিয়র সার্জন জানান, ঠান্ডা পানির এমন কার্যকারিতা আমাদেরকেও অবাক করেছে। প্রতিটি অপারেশন সফল হওয়ায় এখন আমরা অন্যান্য মেডিকেল কলেজেও এই পদ্ধতি প্রয়োগের জন্য যোগাযোগ করেছি।
eআরকির ফ্যাক্ট-চেকিং টিম রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারে, ঠান্ডা পানির কার্যকারিতা নিয়ে তারা অত্যন্ত সন্তুষ্ট। এক রোগী জানান, ঠান্ডা পানি গায়ে লাগলে পুরো জায়গাটা অবশ হয়ে যায়। এনেস্থেশিয়ার ইঞ্জেকশনের জন্য টাকা নষ্ট না করে পানি দিয়েই তো কাজ চলে যায়। অপারেশনের সময় একদমই ব্যথা লাগেনি।
ঢাকা ওয়াসা ইতোমধ্যে এই বিশেষ ঠান্ডা পানিকে প্রক্রিয়াজাত করে বাজারজাত করার বিষয়টি নিয়ে ভাবছে। তাদের মতে, ওয়াসার পানির ইতিবাচক সুনাম রয়েছে, বিশেষত হলুদ পানি, লাল পানি, এবং কালো পানির ক্ষেত্রে। এখন যদি এনেস্থেশিয়ার জন্য বিশেষ ঠান্ডা পানি তৈরি করা যায়, তবে এটি দেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানে একটি মাইলফলক হয়ে উঠবে।
এই নতুন পদ্ধতি কেবল চিকিৎসা খরচ কমাবে না, বরং বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের মানচিত্রে নতুনভাবে তুলে ধরবে বলে আশা করা হচ্ছে।