ঢাকার টিএসসি এলাকায় মেট্রোরেলের পিলারে আঁকা শেখ হাসিনার গ্রাফিতি নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। তার পতনের ২ দিন আগে ছাত্র জনতা মিলে সেই গ্রাফিতিতে রঙ মেখে, জুতার মালা জড়িয়ে ঘৃণা জানিয়েছিল। গত শনিবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে সিটি কর্পোরেশনের কর্মীরা সেই গ্রাফিতি মুছে ফেলার চেষ্টা করলে শিক্ষার্থীদের তীব্র প্রতিবাদের মুখে পড়ে। রবিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে, আজ সোমবার সেই পিলারে আবার নতুন গ্রাফিতি আঁকা হয়েছে।
তবে এবার গ্রাফিতি দেখে মনে হচ্ছে, প্যারালাল ইউনিভার্স থেকে কোনো শেখ হাসিনা এসে দাঁড়িয়ে আছেন! আগেরটার চেয়ে দেখতে বাজে এই গ্রাফিতি দেখে সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয়েছে হাস্যরস। এক শিক্ষার্থী মন্তব্য করেছেন, যেন রিটেক দিতে গিয়ে পরীক্ষার ফল আরও খারাপ হয়েছে।
শেখ হাসিনা নিজেও নতুন গ্রাফিতি দেখে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ছেলেকে ফোনে তিনি বলেছেন, দেখ বাবা, এদের দিয়ে কিছুই হচ্ছে না। তোরা আঁকতে জানোস না, তো তুলি হাতে নিতে গেছিলি কেন? এইভাবে চলতে থাকলে আমার কোনো সম্মান বাঁচবে না। হাজার হোক, ১৫ বছরের ফ্যাসিস্টেরও একটা সম্মান থাকে!
নতুন গ্রাফিতি দেখে নিজের হতাশা প্রকাশের পাশাপাশি শেখ হাসিনা ছবি আঁকা শেখানোর জন্য এক অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন। বাম্বো মডেলের একটি ড্রয়িং ট্যাবলেট কিনে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন কোর্স চালু করবেন।
এই কোর্সে শেখা যাবে রিয়েলিস্টিক ছবি আঁকার কলাকৌশল। শুধু ছবি আঁকাই নয়, শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ক্লাসের অংশ হিসেবে তিনি বিভিন্ন খাবারের বিকল্প খুঁজে বের করা এবং স্বজন হারানোর বেদনা সহ্য করা বিষয়েও পাঠ দেবেন।
কোর্স সম্পর্কে জানতে চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, যে সম্মান রক্ষার জন্য ১৫ বছর লেগে ছিলাম, সেটা কয়েকটা আঁকাবাঁকা দাগ দিয়ে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাই ভাবলাম, সবার আগে এদের শিল্পচেতনা বাড়ানো দরকার। ১৫ বছর ধরে ক্ষমতা দখল করে ছিলাম, আমার চেয়ে কে বেশি জানে শিল্পের মর্যাদা?
বিশ্লেষকরা বলছেন, শেখ হাসিনার এই উদ্যোগ হয়তো তরুণদের মধ্যে শিল্পচর্চার নতুন যুগের সূচনা করবে, তবে তার আগেই হয়তো দেশের গ্রাফিতি শিল্পে আরেকটি হাসিনা অধ্যায় রচিত হবে।