আলতাদিঘীর উন্নয়ন প্রকল্প

৮৫ পঠিত ... ১৭:০০, মে ০৫, ২০২৪

8 (2)

লেখা: অপু নজরুল

প্রচ্ছদে ব্যবহৃত ছবির আলোকচিত্রী: মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান

জীবনে প্রথম আলতাদীঘি গিয়েছিলাম দশ বছর আগে। নীরব জগদ্দল বিহারে ভরদুপুরটা কাটিয়ে বিকাল নাগাদ মেঠো পথ মাড়িয়ে আলতাদীঘির বনে পৌঁছুলাম।

সীমান্ত সংলগ্ন শালবনে নানান পাখির কূজন, বিশাল সব উইয়ের ডিবি, ঝরা পাতা কুড়ানো আদিবাসী রমণীদের চাইতেও মন কেড়েছিলো বিশাল এক আয়তক্ষেত্রিক দীঘি। দীঘির দুপাড়ে ঘন গাছের আচ্ছাদন; কী গাছ এখন মনে না থাকলেও জিলাপি ফল গাছ ছিলো এটা মনে আছে। দীঘি ভর্তি ছিলো পদ্মফুল। এমন অদ্ভুত সুন্দর দীঘি আমি আমার চর্মচক্ষে সে সময় পর্যন্ত কমই দেখেছি৷ সেসময় এখানে ছিলোনা কোন দোকান বা অযাচিত স্থাপনা। ছিলেন না কোন দর্শনার্থীও!

অথচ এই বছর একই স্থানে গিয়ে মাথায় যেন ঠাডা পড়ল। আলতাদীঘি এখন ন্যাশনাল পার্ক ঘোষিত হয়েছে তাই উন্নয়নকাজ চলমান। বনের চারদিকে কোটি কোটি টাকা খরচ করে ওয়াল করা হচ্ছে, সাথে পিকনিক স্পট, অদ্ভুত দর্শন ছাতা আর অযাচিত ওয়াচ টাওয়ার। আর এই সবই করা হচ্ছে গাছ কেটে! তাছাড়া জায়গায় জায়গায় দোকান বসে গেছে, নার্সারীর নাম করে বন কেটে বানানো হচ্ছে বাণিজ্যিক আমের চারা (এই এলাকায় ১০ বছর আগে আম চাষ ছিল না, এখব রমরমা)।

সবচেয়ে ভয়াবহ লাগল আলতাদীঘির পাড়ে এসে! পুরো দীঘির পাড় বাঁধাই করে ফেলেছে, পদ্ম দূরে থাক, দীঘিতে পানিই নাই৷ এসব নাহয় সারিয়ে ফেলবেন কিন্তু চারপাশে হাজারখানেক গাছ কেটে সাবাড় করে ফেলার মানেটা কী? প্রকল্পের নাম জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ প্রকল্প! চারপাশ ফাঁকা করে দিয়ে, দীঘি ও বনের ইকোলজিকাল ব্যালেন্স নষ্ট করে এ কেমন জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ? ন্যাশনাল পার্ক ঘোষণা করে গাছ কেটে দেয়াল আর কুৎসিত দালান কোঠা স্থাপনা নির্মাণ যদি হয় উন্নয়ন আর জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ তবে সেই উন্নয়ন আর সংরক্ষণ আমি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করলাম। যারা এই কাজে জড়িত তাদের সবাইকে ধিক্কার জানাই।

এবার নিচের ছবিগুলোর বর্ণনা। ছবিগুলো আমার তোলা নয়। ১ নম্বর ড্রোন শটে কয়েকমাসের ব্যবধানে আলতাদীঘির ভেজিটেশন এরিয়া ধ্বংসের প্রমাণ উঠে এসেছে। ২ নম্বর ছবি আমাদের তোলা; গত মাসের৷ পানিশূন্য আলতাদীঘি। এখানে ন্যাচারালি পানি উঠছে না।  এখন নাকি পাম্প দিয়ে দীঘি ভরাবে নিয়মিত। কত টাকার মামলা ভেবে দেখেন! ৩-৪ নং ছবিতে কয়েক বছর আগের আলতাদীঘির মনোরম দৃশ্য। গাছে ঘেরা-পদ্মফোঁটা এই দৃশ্য দেখিয়ে জলবায়ু ফান্ডের প্রায় ৭ কোটি টাকা ছাড় করে এনে এই মনোরম সৌন্দর্য ধ্বংস করে প্রকৃতি ও জনগণের সাথে বেইমানী করা হয়েছে।

দায়ী ব্যক্তি ও সংস্থার বিচার চাই।

 

১#

1

 

২#

2

 

৩#

3

 

৪#

4

 

৮৫ পঠিত ... ১৭:০০, মে ০৫, ২০২৪

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top