গাছ কাটা থেকে হরেকরকম আয়

১০২ পঠিত ... ১৬:১৪, মে ০৬, ২০২৪

8 (5)

দেশে অনেকদিন ধরেই চলে আসছে গাছকাটা উৎসব। বন বিভাগ, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, ভিসি, ছাত্রনেতা, মেয়র থেকে শুরু করে ঠিকাদার পর্যন্ত, সবাই উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে অংশগ্রহণ করছেন এই উৎসবে। কাটা গাছ বিক্রি করলে একটা আয় তো আছেই। পাশাপাশি গাছ লাগানোর জন্য নতুন বরাদ্দ, সেখান থেকে আবার নতুন আয়—এইসবও আছে। কিন্তু এর বাইরেও চাইলে এই গাছ কাটা থেকে আরও হরেকরকম আয় করা সম্ভব। কীভাবে? চলুন জেনে আসা যাক। আমলা, মেয়র, ভিসি, রাজনীতিবিদদের জেনে রাখা ভালো। কারণ মহাবিজ্ঞানী রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, আপনি যদি পয়সা ইনকাম করার জন্য মাত্র একটা উৎসের উপর নির্ভরশীল থাকেন তাহলে মনে রাখবেন, আপনি দারিদ্র্য থেকেও মাত্র এক কদম দূরে দাঁড়িয়ে আছেন। 

 

১# গাছ কাটার ট্রেনিং কর্মসূচি চালু করা

গাছ বিক্রি করতে গাছ কাটা দরকার হয়। আর গাছ কাটার জন্য দরকার হয় ট্রেনিং। যেসব শ্রমিকরা গাছ কাটবে তাদের জন্য সরকারি খরচে একটা ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করা যেতে পারে। ট্রেনিং করানোর জন্য লাগবে টাকা। সরকার থেকে এই টাকা বের করে এনে করা যাবে কিছু বাড়তি আয়। দ্রব্যমূল্যের এই যুগে একটু বাড়তি আয় না থাকলে সার্ভাইভ করা আসলেই অনেক কষ্টের।

 

২# গাছ কাটা শিখতে বিদেশ সফর

সামান্য দুর্নীতি আর ঘুষ খেয়ে আর কত টাকাই বা আয় হয়! গাছ কেটে বিক্রি করলেই বা আর কত। এই টাকায় সংসার চালিয়ে দেশে ট্যুর দেয়াই কষ্টসাধ্য হয়ে যায়, বিদেশ ট্যুর দেবে কীভাবে? এই সমস্যা থেকেও আপনাকে মুক্তি দিবে গাছ কাটা। এটা শেখার জন্য বিদেশ সফরের একটা বাজেট বের করে নিতে পারলেই কেল্লাফতে। আর বাংলাদেশের অপারেটিং সিস্টেম বিবেচনায় রাখলে তো আপনি জানেনই, এই ধরনের কাজে সরকার থেকে টাকা বের করে নিয়ে আসা খুব একটা কঠিন কাজ না।

ভাবছেন, ভাই, এখান থেকে তো বিদেশ সফর করা যাবে। কিন্তু টাকা কই? চিন্তার কিছু নেই, একটা ট্রাভেল এজেন্সি খুলে ফেলতে পারেন। এরপর গলাকাটা ভিসায় ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে সরকারি ট্যুর প্যাকেজ বিক্রি করে ক্যাশ টাকায় জীবন ভরিয়ে তুলতে পারবেন।

 

৩# সোনার গাছ লাগানো

দেশ উন্নত হচ্ছে, সেটা তো আর না দেখিয়ে থাকা যায় না। সৌন্দর্য্যবর্ধন বলেও তো একটা ব্যাপার আছে। সেজন্য গাছ কেটে সেখানে সোনার গাছ লাগানোর প্রকল্প হাতে নেয়া যেতে পারে। তাছাড়া এত উন্নত একটা দেশের রাস্তায়, বনে, মাঠে, হাটে যদি একটু সোনার গয়নাই না থাকলো তাহলে এই উন্নতি দিয়ে আমরা করবোটা কী? সোনার গাছের বাজেট বের করার পর বুদ্ধি করে এমিটিশনের গাছ লাগাতে হবে। বাকি টাকা রেখে দিতে হবে বাড়তি আয়ের খাতে।

 

৪# গাছ কাটার জন্য স্পেশাল করাত কেনা প্যাকেজ

গাছ কাটতে লাগবে করাত। আর করাত কিনতে লাগবে টাকা। টাকা কে দেবে তা তো আপনারা জানেনই। একনেকে গিয়ে একটা করাত কেনা প্রকল্প পাশ করাতে হবে। তবে একটা জিনিস মাথায় রাখবেন, করাতে দাম কোনোভাবেই সাধারণ বাজার মূল্যে রাখা যাবে না। সরকারি বাজার মূল্যে রাখতে হবে। অর্থাৎ করাতের বাজার মূল্য ১ হাজার টাকা হলে সরকারি বাজার মূল্যে ধরতে হবে ১ লক্ষ টাকা। করাতেই পাশাপাশি আরও ইনকাম বাড়ানোর জন্য দঁড়ির বাজেটও রাখা যেতে পারে।

 

৫# সম্ভাব্যতা যাচাই করে আয়

সম্প্রতি সরকারি কর্মকর্তাদের বাড়তি আয়ের ক্ষেত্র হিসেবে সম্ভাব্যতা যাচাই বেশ লাভজনক ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। ব্রিজ করা যাবে কি না—তার সম্ভাব্যতা যাচাই, রাস্তা করা যাবে কি না—তার সম্ভাব্যতা যাচাই, এমন অনেক সম্ভাব্যতা যাচাই করেও বাড়তি আয় করা সম্ভব। গাছ কাটা যাবে কি না—এই মর্মে একটা সম্ভাব্যতা যাচাই কর্মসূচি হাতে নেয়া যায়। এখান থেকে অন্তত কয়েক কোটি টাকা বাড়তি আয়ের একটা ক্ষেত্র তৈরি করা সম্ভব।

মনে রাখবেন, এখন সময় বাড়তি আয়ের। কেউই আর এখন শুধুমাত্র একটা আয়ের উৎস নিয়ে বসে থাকে না। আপনারাও শুধু গাছ কেটে টাকা আয় করবেন, এমন চিন্তা নিয়ে বসে থাকবেন না। নিজেকে মেলে ধরুন, পকেট ভারি করুন।

১০২ পঠিত ... ১৬:১৪, মে ০৬, ২০২৪

Top