বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শান্তি বজায় রাখতে আমেরিকার প্রতি বাংলাদেশের ৫ পরামর্শ

১৪৭ পঠিত ... ১৬:০১, মে ০৬, ২০২৪

16 (6)

ফিলিস্তিনে ইজরাইলের নির্বিচার হামলা ও হত্যার প্রতিবাদে বেশ কিছুদিন ধরেই আমেরিকার শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে আসছে। ধীরে ধীরে অন্যান্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েও ছড়িয়েছে এই বিক্ষোভ। বিক্ষোভ দমনে আমেরিকা সরকারের পুলিশি হামলা ও অভিযানের রয়েছে অনেক সমালোচনা। ইজরাইলের প্রতি নিরঙ্কুশ সমর্থন দেয়া আমেরিকা, নিজেদেরকে সারাবিশ্বের মোড়ল দাবি করা দেশটিতে কেন ছাত্র বিক্ষোভ হলো বা হচ্ছে? কেন তারা আগেই এই বিক্ষোভের পথ বন্ধ করতে পারেনি? কী করলে এই বিক্ষোভ জন্মই নিত না, এমন নানান বিষয় নিয়ে আমেরিকার প্রতি বাংলাদেশের ৫ পরামর্শ।

 

১) ভিসি নিয়োগে মনোযোগ দেওয়া

আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কীভাবে ভিসি কীভাবে নিয়োগ হয়? ভিসি নিয়োগের যে প্রক্রিয়া, সেখানে কি বিক্ষোভ সামাল দেয়ার মত বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখা হয়? মনে হয় হয় না। হলে তো আজকের এই দিন দেখতে হত না। এই ক্ষেত্রে ভিন্ন বাংলাদেশ। ভিসি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রণে রাখাই থাকে মূল উদ্দেশ্যে। দেশ যেদিকেই যাক, ভিসি শুধুমাত্র সরকারের কথামতই বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রণ করবেন—এই বিষয়টি অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। অনেক উন্নত দেশ ভিসি নিয়োগের ক্ষেত্রে তার ক্যারিয়ার, গবেষণাসহ নানান কিছুকে গুরুত্ব দেয়, আমেরিকাও হয়ত এই ভুলই করেছে। এই ভুল থেকে তাদেরকে বের হয়ে আসতে হবে। সামনের দিনগুলোয় ভিসি নিয়োগের ক্ষেত্রে গবেষণা থেকে বেশি প্রাধান্য দিতে হবে ভিসির রাজনৈতিক পরিচয়। সরকারের প্রতি শতভাগ আনুগত্ব বজায় রাখবে—এমন ভিসি ছাড়া নিয়োগ দেয়াই যাবে না। মনে রাখতে হবে, ভিসি হাতে মানে বিশ্ববিদ্যালয় হাতে।

 

২) ছাত্রলীগের আমেরিকা শাখার কমিটি দেওয়া

এত উন্নত একটা দেশ, এত তাদের বুদ্ধি—কিন্তু একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কমিটি নাই! এমন নির্বোধদের দেশে আন্দোলন হবে না তো কাদের দেশে হবে? বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র আন্দোলন দমনে ছাত্রলীগের যে অবদান, এটাকে কাজে লাগাতে পারে আমেরিকা। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কমিটি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি তাদেরকে সরবরাহ করতে হবে পর্যাপ্ত হেলমেট, ক্রিকেট ব্যাট, স্ট্যাম্প। এরপর আমেরিকা সরকারের আর কোনো কাজ নাই, তারা নাকে তেল দিয়ে ঘুমাবে। যা করার ছাত্রলীগই করবে। আন্দোলন তো দূরে থাক, শিক্ষার্থীরা আর ফেসবুকে স্ট্যাটাসও দিতে পারবে না। তাছাড়া বিক্ষোভকারীদের শিবির উপাধি দিয়ে মারধর করে হল থেকে সহজেই বের করে দিতে পারবে।

 

৩) বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একদলীয় রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করা

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বহুদলীয় গণতন্ত্রই চলমান। কিন্তু বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যাওয়গুলো খেয়াল করলে দেখবেন এখানে একদলীয় গণতন্ত্রের একটা দারুন সিস্টেম দাঁড়িয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো নীল দলের দখলে, প্রশাসনিক পদগুলোও একই দলের দখলে। এই নিদারুণ নীলকরণ পদ্ধতি আছে বলেই বাংলাদেশ ছাত্র আন্দোলন দমনে এতটা সফল। আমেরিকার উচিৎ আমাদের কাছ থেকে শেখা। যদি এইটুক জিনিস শিখতেই না পারে তাহলে এইসব এমআইটি, হার্ভার্ড, জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় দিয়ে কী লাভ?

 

৪) গেস্টরুম-গণরুম প্রতিষ্ঠা করা

কথিত আছে, প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম। আর একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র আন্দোলন প্রতিরোধ করতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গেস্টরুম ও গণরুম প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। কারণ, এক গবেষণায় দেখা গেছে, যে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে গেস্টরুম-গণরুম আছে সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সাধারণত কোনো আন্দোলন বা বিক্ষোভ করার সাহস পায় না। কেউ কেউ সাহস করলেও তাদেরকে থামিয়ে দেয়ার জন্য গণরুম বা গেস্টরুমের একটা রাতই যথেস্ট।

 

৫) বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনে চা-চপ-সিঙারার প্যাকেজ রাখা

একটি ছোট্ট প্যাকেজ কীভাবে একটা বিশ্ববিদ্যালয়কে বছরের পর বছর শান্তির স্থান করে রাখতে পারে তার আদর্শ উদাহরণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চা-চপ-সিঙ্গারা প্যাকেজ। গিনেজ ওয়ার্ল্ড বুকে নাম লেখানো এই প্যাকেজ নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়েও চালু করতে পারে আমেরিকা। ১০ টাকার এই প্যাকেজ খেয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা শান্ত থাকবে, কোনো ধরনের বিক্ষোভ করবে না। প্রয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আক্তারুজ্জামানকেও নিয়োগ দিতে পারে।

 

১৪৭ পঠিত ... ১৬:০১, মে ০৬, ২০২৪

Top