আমার বন্ধু নরেনের সাথে সম্পর্কটা ইদানীং খুব তুখোড় যাচ্ছে। মানে একদম রমরমা আর কি। যারে বলে হরেহরে আত্মা।
তো, এমনিতে না যাওয়ারও কথা না। ধরেন এই কলাটা-মুলোটা, দাম বাড়লে পেয়াজটা-নুনটা; নরেন যখন যা চায় তা-ই দেই। বন্ধু বলে কথা। না দেবার তো কিছু নেই। আমার একটু জলে সমস্যা, চাপকল একটা ছিল, কিন্তু পাতালে পানি না থাকায় সহজে পানি পাই না।।
নরেনের বাড়িতে একেবারে ডিপটিউবওয়েল আছে, সারাদিনই পানি উপচে পড়ে। বলেছিলুম, একটু আমাকে দিস। এই দিনে এক কলসি কি দুকলসি দিলেই চলবে। তো নরেন বলল, 'বুঝিসই তো, আমি তো দিতেই চাই, কিন্তু তোর ভাবির পেটেপেটে হিংসে। ওর জন্যই দিতে পারি না।' বটেই তো! সে বাবা সামান্য পানির জন্য ওদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি লাগুক তা-ও আমি চাই না। আমাদের তো অনেক বন্ধুত্ব। বন্ধু হয়ে কি বন্ধুর ঘরের অশান্তি চাইতে পারি!
নরেন আমাকে মাঝেমধ্যে ওদের বাড়িতে নেমন্তন্নও দেয়। নেমন্তন্ন দিলে আমি
সেটা রাখি। শত হলেও বন্ধুর বাড়ির নেমন্তন্ন। আমার বাড়ি এলে আমি একদম দরজায় দাঁড়িয়ে বন্ধু স্বাগত করি। ওদের অবশ্য একটু সমস্যা। খুব ব্যস্ত থাকে তো!
দরজায় গিয়ে দাঁড়ালে নরেন এসে দরজা খুলে দিতে পারে না। বউটা এলে কিংবা নরেনের একটা ছেলেপেলেও যদি দরজা খুলে দিয়ে দুটো কথা বলত, তাহলেও কথা ছিল। কিন্তু ওরা অনেক ব্যস্ত থাকে তো!
নরেনের ঘরের ছুটা কাজের বুয়া এসে দরজা খুলে দেয়। তারপর এক কাপ ঠাণ্ডা চা সামনে রেখে কোথায় যেন হাওয়া হয়ে যায়।
নরেন কখনো সখনো আসে। নইলে নরেনের ছেলেপেলেদের সাথে দুই হাত দাবা খেলে আমি নেমন্তন্ন খেয়ে চলে আসি।
অন্য কোথাও হলে রাগ করতাম। বলতাম যে 'যথাযথ সম্মান না দিলে তোর বাড়িতে আর আসব না রে মুখপোড়া।'
নরেনের সাথে এসব করা যায় না। শত হোক বন্ধু বলে কথা।
বন্ধুর সাথে এতো রাগ অভিমান করলে চলে নাকি!
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন